নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই। শনিবার উপজেলার রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে নবীন যুব সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম।
ষাঁড়ের লড়াই ঘিরে সকাল থেকেই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দুপুর গড়াতেই রঘুনাথপুর বিদ্যালয়ের মাঠের চারিপাশে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কেউ স্কুলের বারান্দায় কেউ বাড়ির ছাদ আবার কেউ গাছে উঠে উপভোগ করেন এ ষাড়ের লড়াই। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্করাও লড়াই দেখতে ভিড় করেন। প্রতিযোগিতায় আড়পাড়া, যাদবপুর,শোলপুর,মির্জাপর, পেড়লী সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০ টি ষাঁড় অংশ নেয়।
মির্জাপুর থেকে আসা সুবুদ্ধি বিশ্বাস বলেন, আমি সহ আমাদের গ্রাম থেকে নসিমন যোগে ১৫ জন এক সাথে ষাড়ের লড়াই দেখেছি৷ ষাড়ের লড়াই দেখার আনন্দ আলাদা৷ যদি বৃষ্টি না হত তাহলে এখানে আসা মানুষ আরো সুন্দর ভাভে এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে পারত৷
আয়োজকদের মতে, গ্রাম বাংলার মানুষের বিনোদন সামাজিক ঐক্যের প্রতিক এই ষাড়ের লড়াই। আমাদের সকলের পুরোনো এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা উচিত যাতে করে আগামি প্রজন্ম কাছে এটি জীবন্ত থাকে। ষাঁড়ের লড়াই শুধু একটি সাধারণ খেলা নয়,এটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আয়োজক হাসিফ শেখ বলেন, আগে বিভিন্ন মেলা, উৎসব ও বিশেষ উপলক্ষে এই লড়াই আয়োজন করা হতো।বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিস সরকারের জন্য গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী এই খেলা এই মাঠে দিতে পারি নাই।জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের নেতৃত্বে এ বছর আমরা এটার আয়োজন করেছি।আমরা চেষ্টা করব আগামি প্রজন্ম যাতে করে এটা ধরে রাখতে পারে। গ্রামের সকলে এই আনন্দ বিনোদন এক সাথে অংস নিতে পারে সেই উদ্দেশ্য আমাদের এই আয়োজন।
নবীন যুব সংঘের সভাপতি ও ষাড়ের লড়াইয়ের আয়োজক মো. সায়েবুজ্জামান তোহা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মকে এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনে বিপুল দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে বুঝা যায়, এখনো মানুষ এই ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট। আমারা আাগমিতে ও ঐতিহ্য ধরে রাখাতে এধরনের আয়োজন করব সচেতন উদ্যোগ। তাই ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন করা হবে।
ষাড়ের লড়াইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিগত ১৫ বছরে এ এলাকার মানুষ এত সুন্দর আয়োজন করতে পারিনি। বিগত সরকারের আমলে মানুষের বিনোদনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। আমরা দেখেছি আগে জারি গান হত, এড়ে লড়াই হত, নৌকা বাইচ হত, ঘৌড় দৌড় হত কিন্তু বিগত সরকারের আমলে কোন কিছু আমরা দেখতে পাই নাই। মানুষকে এমন ভাবে জিম্বি করে রেখেছিল যে মানুষের কোন বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। আজগে এই সরকার বিতারিত হয়েছে। বিতারিত হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার। এখন মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখন বিভিন্ন জায়গার এড়ে লড়াই, জারি গান, সারি গান, সব কিছু আগের জায়গায় চলে এসেছে।
আরও পড়ুন : নরসিংদীতে রায়পুরায় কীটনাশক ও সারের ৬ দোকানীকে জরিমানা
Leave a Reply