জামালপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী পাঁচজন। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘মির্জা আজমের প্রার্থী’ ফারুক আহম্মদ চৌধুরী।
তাঁর দাপটে কোণঠাসা আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী এইচ আর জাহিদ আনোয়ারও। অন্য তিনজনও ফারুকের ‘পোষ্য প্রার্থী’ বলে প্রচার আছে।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জাহিদ আনোয়ার বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত পত্র দিয়ে আমাকে প্রার্থী করা হয়েছে। তারপরও ফারুক চৌধুরীকে প্রার্থী করেছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।
এখানে শেখ হাসিনার প্রার্থীর সঙ্গে মির্জা আজমের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।’ তাঁদের দাপটের কারণে সুষ্ঠুভাবে ভোট হবে কি না, সেই শঙ্কা করছেন জাহিদ।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের উপস্থিতিতে গত ১৭ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর নাম বাছাই করা হয়।
মির্জা আজমের ঘনিষ্ঠ সহচর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরীকে সমর্থন দেওয়ায় আর কেউ ‘টুঁ’ শব্দ করেননি।
কিন্তু ২৫ নভেম্বর দলের কেন্দ্র থেকে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে ফারুক চৌধুরীর ঠাঁই হয়নি। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ বলে পরিচিত জেলা কমিটির সহসভাপতি জাহিদ আনোয়ারকে সমর্থন দেয় কেন্দ্র।
পরে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন হলেও সিদ্ধান্ত আর বদলায়নি। ফলে ফারুক চৌধুরী ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হন। এ প্রসঙ্গে ফারুক আহম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘দলের বড় বড় নেতারা বলছেন নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত।
ফলে আমি তো নির্বাচন করতেই পারি।’ মির্জা আজমের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁকে (ফারুক) সমর্থন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজমকে পচানোর জন্য অপপ্রচার করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্র বলছে, কেন্দ্রের চাপ এড়াতে ফারুক চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান ও নিজের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমকে ‘ডামি’ প্রার্থী করেছেন।
ভোটের দিন এসব প্রার্থী ও এজেন্টদের দিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফারুক চৌধুরীর পক্ষে প্রভাব বিস্তার করা হবে।
নির্বাচনের প্রচারণার মাঠও ফারুক চৌধুরীর দখলে। একমাত্র জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম ওরফে রেজনু দলীয় প্রার্থী জাহিদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। জাহিদের পক্ষে জেলার আর কোনো নেতা মাঠেই নামতে পারছেন না। সেই ক্ষেত্র আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল।
গত বছর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যে কমিটি হয়, তার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় সবাই মির্জা আজমের অনুগত। কাউন্সিলরদের ভোট ছাড়া সেই কমিটি হয়েছিল।
রেজাউল করিম বলেন, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই প্রকাশ্যে জাহিদের পক্ষে কাজ করতে পারছেন না। কারণ, জামালপুরে মির্জা আজমের ইশারা ছাড়া কারও কিছু করার সাধ্য নেই।
আর তাঁর পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন ফারুক চৌধুরী। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে ‘নীরব ব্যালট বিপ্লব’ হবে বলে মনে করছেন রেজাউল।
আরও পড়ুন নাগরপুরে আখ চাষে কৃষকের মুখে মিষ্টি হাসি
Leave a Reply