হোসেন শাহ্ ফকির ,ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি :
মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ইসলামপুরে জাতীয় পতাকা বিক্রি বেড়েই চলছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাড়া, মহল্লায়, অলি-গলিতে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন ফারুক বেপারী।
ইসলামপুরে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, গাড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেলের সামনে দুলছে লাল-সবুজের পতাকা। আর ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছে ভ্রাম্যমাণ পতাকা বিক্রেতার ফারুক বেপারী।
কথা হয় মৌসুমি পতাকা বিক্রেতা ফারুক বেপারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি পতাকার বিক্রির সাথে গত ৫ বছর যাবত জড়িত। বছরের এ সময় দেশের বিভিন্ন উপজেলা,জেলা ও বিভাগীয় শহরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে পতাকা বিক্রি করেছি। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস।
এ মাসে পতাকা বিক্রির ভালো ব্যবসা হয়। তাই এ সময় পতাকা বিক্রি অনেকটা বেশি হয়। প্রতিটি জাতীয় পতাকা সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ি জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার বেপারী পাড়া গ্রামে। আমি ৫ বছর আগ থেকে পতাকা বিক্রি করতে আসছি। জাতীয় পতাকা বিক্রি করে আমি গর্বিত।
আমি মনে করি, পতাকার মাধ্যমে আমি দেশের মানুষের কাছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি তুলে ধরছি। পতাকা দেখলেই মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত কথা।
এ পতাকার জন্য বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। আর পতাকা বিক্রি করেই আমি পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন নির্বাহ করি।
সরকারি ইসলামপুর কলেজের সেমিনার সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মীর জহির তার আর ওয়ান ফাইভ মোটর সাইকেলের সামনে বাঁধা ছোট্ট একটি জাতীয় পতাকা। তিনি ২০ টাকা দিয়ে কিনেছেন পতাকাটি।
জহির বলেন, ‘সারা দিন কাজ শেষে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মোটরসাইকেল চালালে আমার খুব ভালো লাগে। আমি মুক্তিযুদ্ধাদের যুদ্ধ করতে দেখিনি, তাই জাতীয় পতাকার দিকে যখন তাকাই তখন মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বেশ মনে পড়ে। আর লাল সবুজরে পতাকার দিকে তাকালেই সব দুঃখ বেদনা ভুলে যাই।
সাংবাদিক রোকনুজ্জামান সবুজ গোরস্থান মোড় থেকে দুটি পতাকা কিনেন একটি নিজের জন্য, অন্যটি মেয়ের জন্য। সাংবাদিক রোকনুজ্জামান সবুজ বলেন ‘পতাকার জন্য যুদ্ধ করতে দেখিনি, কিন্তু গল্প শুনেছি, আর বইতে পড়েছি।
বছর ঘুরেই আসে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।
আর বিজয়ের মাস আসলেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পতাকা বিক্রির ধুম পরে যায়। তারা পায়ে হেঁটে শরীরে এবং মাথায় পতাকা বেঁধে বিভিন্ন সাইজের জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন। বিজয়ের চেতনায় এ মাসের শুরু থেকেই বেড়ে যায় জাতীয় পতাকার ব্যবহার।
পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে শহরের অলি-গলিতে মৌসুমী পতাকা বিক্রেতারাও হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন দেশের জাতীয় পতাকা। নির্ধারিত মাপে কাপড়ের পতাকার পাশাপাশি কাগজ দিয়ে তৈরি পতাকাও বেশ বিক্রি হচ্ছে।
কাগজের পতাকা দিয়ে ফুটপাথ বা দোকানপাট, বাসা সাজানো হচ্ছে। শুধু পতাকা নয়, লাল-সবুজের মাথার কাগজের ক্যাপ, রাবার, হাতের ব্যাজ বিক্রি করছি।
কয়েকজন বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকারভেদে ১০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি হয়। এছাড়া কাগজের ছোট পতাকাসহ বিভিন্ন সাইজের পতাকা বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আঃ বাছেদ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য একটি জাতীর প্রতীক পতাকা, পতাকা নির্দিষ্ট রঙ এবং মাপ থাকলেও তা অনেকেই মানছেন না।
বিভিন্ন জায়গায় গাঢ় সবুজ মাঝখানে লাল রক্তিম সূর্যের রঙ খুঁজে পাওয়া যায় না, এমনকি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।
আরও পড়ুন পিপিইপিপি প্রকল্পের জীবিকায়ন কম্পোনেন্টের টিও এটিও ব্যস্ত সময় পার করছে আরডিএ তে
Leave a Reply