
মোঃ হারুন অর রশিদ: আকাশ মেঘলা হলেই শহরে মানুষ নির্ভয়ে টিভি দেখে, ফ্রিজ চলে, ফ্যান ঘুরে। কিন্তু একই দেশের কোনো গ্রামে তখনই শুরু হয় আতঙ্ক—“আকাশ মেঘলা গুড়ি কয়েক ফোটা পড়ছে, এখনই বিদ্যুৎ চলে যাবে!” এ যেন দীর্ঘদিনের এক অব্যক্ত বাস্তবতা।
বৃষ্টি, ঝড় বা সামান্য বাতাসের ছোঁয়াতেই অনেক গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অথচ শহরে ঝড়-বৃষ্টি-তুফান যাই হোক না কেন, বিদ্যুৎ এক মুহূর্তের জন্যও যায় না।
এই বৈষম্যের কারণ একটাই—অবকাঠামোগত অবহেলা।
শহরের বিদ্যুৎ লাইন এখন আন্ডারগ্রাউন্ড, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা আছে, কিন্তু গ্রামীণ বিদ্যুৎ লাইন এখনো পুরনো, খোলা তারে ঝুলে আছে।
তারের ইনসুলেশন নষ্ট, ট্রান্সফরমার অচল, ফিউজ পুড়ে গেলে লাইনম্যান না এলে বিদ্যুৎ ফেরে না। ফলে একফোঁটা বৃষ্টি মানেই অন্ধকার। দুর্বিষহ আন্ত্রিক যন্ত্রণা বিদ্যুৎ নির্ভর খেটে খাওয়া মানুষের।
গ্রামের মানুষও এখন মোবাইল, ইন্টারনেট, অনলাইন শিক্ষা, ব্যবসা—এসবকিছুর ওপর নির্ভরশীল।
বিদ্যুৎ না থাকলে তাদের দৈনন্দিন জীবন থমকে যায়, পশুপালন থেকে শুরু করে দুধ সংরক্ষণ পর্যন্ত সব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।
দেশের উন্নয়ন তখনই অর্থবহ হবে,যখন বিদ্যুৎ সেবা শহর-গ্রামের মধ্যে সমানভাবে নিশ্চিত হবে।
গ্রামীণ জনপদের প্রানের দাবি— শুধু শহরে নয়, গ্রামের প্রতিটি ঘরে বৃষ্টি-ঝড়েও স্থিতিশীল বিদ্যুৎ পৌঁছে যাক। এটাই হবে প্রকৃত অর্থে “উন্নত বাংলাদেশ” গড়ার প্রথম পদক্ষেপ।
Leave a Reply