হাছানুর রহমান ডিমলা নীলফামারীঃ
যখন ঘড়ির কাটায় কাটায় রাত ৮ টা বাজে তবুও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উড়ছে জাতীয় পতাকা। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এমন একটি ঘটনা ঘটেছে ডিমলা উপজেলার ঝুনাগায় চাপানী ইউনিয়নের বিন্যাকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রাতে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন, পরে সেই ছবিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন-অর-রশিদ সকাল সাড়ে নয়টায় পতাকা উত্তোলন করে। উত্তোলনের পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জরিপে জন্য এলাকায় ঘুরতে যান তিনি। মাঠ জরিপের পরে তিনি বিদ্যালয়ে না এসে বাড়িতে ফিরে যায়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পান বিদ্যালয়ে এখন পতাকা উড়ছে। এমন একটি ভিডিও দেখার পরে এসে পতাকা নামিয়ে ফেলেন ওই শিক্ষক। এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সকালে কোনো শিক্ষার্থী আসেনি, সকাল বেলা প্রধান শিক্ষক এসে পতাকা উত্তোলন করার পরে চলে গেছে। রাত ৮টা বাজলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পতাকা নামাননি। আরেকজন বলেন, আজ শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস। আমরা ৩০ লাখ শহীদ ও ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা পেয়েছি। এ পতাকার অবমাননা মেনে নেওয়া যায় না। স্কুল চলাকালে রাতের বেলা জাতীয় পতাকা উড়ছে এটা কর্তৃপক্ষের অবহেলা।
আব্দুল গফ্ফার নামে একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন, ‘অদ্য ১৪/১২/২০২৩ তারিখ রাত ৮ ঘটিকায় অবধি ৮ নং ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের বিন্যাকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা অবস্থায় কিছু ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হলো। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে চাই যে, দেশের জাতীয় পতাকা ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, সেই দেশের জাতীয় পতাকার অবহেলা/ অবমাননা মেনে নেয়া যায় না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
বিন্যাকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন-অর-রশিদ জানান, সারাদিনে শিক্ষার্থী জরিপের জন্য গ্রামে ছিলাম। সেই কারণে পতাকা নামাতে পারিনি। আর যে রাতে এসে ছবি তুলেছে তিনি অবশ্যই চোর। কারণ যদি চোর না হয় রাতে কেউ বিদ্যালয়ের মাঠে ঘুরবে কেন? আর কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে আপনারা সাংবাদিকরা কেন এর পিছু নেন? আমার পরিবারেও অনেক বড় বড় সাংবাদিক আছে।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, রাতে পতাকা উত্তোলন করা কোনো অপরাধ নয়? আর আমি পতাকা উত্তোলন করে কোনো দোষ করিনি। অফিসে আসেন এক সঙ্গে চা খাবো।
এনিয়ে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এএম শাহজাহান সিদ্দিক জানান, রাতে পতাকা উত্তোলন করতে পারে না। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply