
মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কোদালিয়া ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস দখল করে বিএনপি’র দলীয় কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি নেতা বায়েজিদ মোল্লাকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট স্থানীয় বিএনপি নেতা বায়েজিদ মোল্লা ও মোহাম্মদ মোল্লা মুক্তিযোদ্ধাদের অফিসের তালা ভেঙে ভেতরে থাকা আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলেন। এরপর সেখানে দলীয় ব্যানার, পোস্টার ও পতাকা টানিয়ে বিএনপি’র কার্যালয় হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেন।
এ ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাফরুজ্জামান, ছবর আলী, আবুল বাশার ও কুব্বত আলীসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেন, এটি শুধু একটি অফিস নয় এটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও ইতিহাসের অংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস দখল মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অসম্মান করা। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অফিসটি দখলমুক্ত করুক।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ২০০৮ সালের নভেম্বরের আগে ভবনটি ছিল কোদালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত গুদামঘর। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্মারক নং ৮২৮/২০০৮ এর মাধ্যমে ভবনটি মুক্তিযোদ্ধা অফিস হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেন। এরপর তারা নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি সংস্কার করে সেখানে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা বায়েজিদ মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা আমাদের পুরনো অফিস। আমার দাদা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা চেয়ারম্যান থাকাকালে এখানেই বিএনপির দলীয় কার্যক্রম চলত। পরে কিছু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জায়গাটি দখল করে নেয়। আমরা শুধু আমাদের পুরনো অফিস পুনরুদ্ধার করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন আল রশীদ বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। তাদের সম্মান এবং অবদান যথাযথ সম্মানের সঙ্গে রাখতে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর মোল্লাহাট উপজেলা বিএনপি প্রায় পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান করেছিল। অথচ দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা অফিস দখলের অভিযোগ নানা ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, একদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, অন্যদিকে তাদের অফিস দখল করা বিষয়টি নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লামায় বালুখেকোর কারাদণ্ড ও স্কেভেটর জব্দ
Leave a Reply