মোঃ হারুন অর রশিদ: সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ি অঞ্চল ও গ্রামীণ জনপদে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা। মাঠে, জঙ্গলে, খালবিলে কাজ করতে যাওয়া খেটে খাওয়া মানুষেরা যেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন পেটের দায় মেটাতে বাধ্য হচ্ছেন।
কিন্তু এই ঝুঁকি যখন বিষাক্ত সাপের কামড়ে বাস্তবে রূপ নেয়, তখন মৃত্যুর দুয়ার খুলে যায় এক লাফেই—কারণ, হাতের কাছেই থাকে না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, বিশেষ করে অ্যান্টিভেনম।
সাংবাদিক ফরিদুল ইসলাম বলেন-গ্রামে সাপে কাটা রোগী থাকে, অথচ অ্যান্টিভেনম মজুদ থাকে জেলা শহরে—এ যেন এক নির্মম বাস্তবতা। দুঃখজনকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবায় এই জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নেই বললেই চলে। ফলে সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই প্রাণ হারান।
প্রশ্ন উঠেছে— জেলা শহরের হাসপাতালে যদি সাপে কাটা রোগীই না আসে, তাহলে ওষুধ থাকবে সেখানেই কেন?
এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে, একের পর এক মৃত্যু থামানো যাবে না। গ্রামেই সাপে কাটে, গ্রামেই চাই অ্যান্টিভেনম মজুদ।
সাধারণ জনগণের দাবিগুলো হলোঃ
১. ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়মিত অ্যান্টিভেনম সরবরাহ নিশ্চিত করা।
২. স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সাপে কাটা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেওয়া।
৩. দ্রুত রেফার সিস্টেম ও অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা চালু করা।
৪. সাপে কাটা রোগীকে “জরুরি” রোগী হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ বরাদ্দ রাখা।
স্বাস্থ্য সহকারী ফরিদুল ইসলাম খাজা বলছেন, “যেখানে ঝুঁকি বেশি, সেখানে প্রস্তুতি বেশি থাকা উচিত। অ্যান্টিভেনম শুধু জেলা শহরে নয়, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বা কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে থাকা উচিত, না হলে এই মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই থাকবে।
সাপে কাটা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, বরং বাস্তব ও প্রতিদিনের ভয়। সময় এসেছে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবায় এই সমস্যা গুরুত্বের সাথে নেওয়ার। কারণ, সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধ থাকলেই বাঁচানো যায় প্রত্যন্ত এলাকার খেটে খাওয়া মানুষের একটি জীবন।
আরও খবর: নরসিংদীর সাবেক এমপি বুবলি গ্রেফতার 11110
Leave a Reply