মালিকুজ্জামান কাকাঃ আলোচিত আশা হত্যা মামলার দুইজন বাতীত সকল আসামি এখন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এরা আত্ম সমর্পণ করেছেন। এদের পাঁচ আসামির বুধবার বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। আসামিরা সকলেই নিরীহ বিএনপি কর্মী বলে জানা গেছে।
৫ জনের দুই দিনের। রিমান্ড মঞ্জুর করেন এজলাস জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। আসামিরা হচ্ছে মামলার ১ নং আসামি বিপ্লব, ২নং আসামি মোহর ৩ নং আসামি ইনামূল হক নসু, ৮ নং আসামি জাহাঙ্গীর, ১৭ নং আসামি আরিফুল হক। এদের মধ্যে অসুস্থ বিএনপি কর্মী রয়েছে।
চিহ্নিত চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী আশা হাটের দিন গণ পিটুনিতে মারা গেছে। ছুটিপুর বাজার কমিটির সভাপতি অসুন্থ বি এনপি নেতা আহাম্মদ আলী কারাভোগ করে বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ছুটিপুর বাজার ও সংলগ্ন গ্রাম এলাকা আশা হত্যা ও তার মামলায় প্রভাবিত।
বাজারের লোকজন বলেন, গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের বালিয়া কসুটি গ্রামের মৃত আতাল হকের ছেলে আসাদুল ইসলাম আশা চিন্নিত চাঁদাবাজ। সে ও তার দোসররা তাবৎ গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর। ঘটনার দিন ছিল হাটবার। এক দফা এসে আশা বাহিনী বাজার কমিটির সভাপতি আহাম্মদ আলীর কাছে সদলবলে চাঁদা নিতে আসে। এসময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
ওরা এটা সেটাতে কোপ দেয়। এরপর আহম্মদ আলীর ছেলে বিপ্লব শুনতে এলে তাকেও মারধোর করে। হাঁটের লোকজন খেপে যা তা বলে। তখন তারা চলে যায়। এর পর আশা ঘোষণা দেয়, আহাম্মদের ছেলে বিপ্লব, কাগমারীর লুৎফারের ছেলে মোহর, গঙ্গানন্দপুরের মৃত রমজান মোড়লের ছেলে এনামুল হক নসু কে খুন করে তবেই ক্ষান্ত হবে। দুপুরের পর আবার গুছিয়ে আসে। এসময় আহাম্মদ ও বিপ্লব কে মারতে উদ্দত হলে হাটের লোকজন গণপিটুনি দেয়। সেখানে অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে গেলেও আশা ও তার ভাই মঈদুল মার খায়। শনিবার (১০ মে) বিকেলের ঘটনা।
আহতদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে আশার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। ঢাকা মেডিকেলে তিনি মারা যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। গণ পিটুনিতে আহত মইদুল যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সরেজমিনে জানা যায়, আশার বোন নাসিমা বেগম বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় মামলা দেন। তবে মামলা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্নের উদ্রেক হয়। কেননা ৩নং আসামি এনামুল হক নসু ঘটনাস্থলে আদতে ছিলেন না। তিনি বাড়িতে ছিলেন। ৬ নং আসামী আহাম্মদ চরম অসুস্থ। কাগমারীর আলী আহাম্মদের ছেলে জাহাঙ্গীর, ছুটিপুরের সাহাদতের ছেলে খলিল ঘটনার সাথে জড়িত নন। অজ্ঞাত হিসাবে যাদের খোজা হচ্ছে তারাও সাধারণ বিএনপিকর্মী।
জানা গেছে বিশেহরির বিএনপি নেতা মোমিনুর রহমান তার আখের গোছাতে মামলায় ইচ্ছে খুশি আসামি করেছেন। তিনি ঝিকরগাছা থানা বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক।
ছুটিপুরে খুন হওয়া আশা ঐ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে পার্শবর্তী ধুলিয়ানি ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মিরাজের এপাচী ফোর জি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। পরে তা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার দিন সে গুলবাকপুরের এক করিমন চালককে মারধোর করে। সে ২০ টির বেশি মামলা নিয়ে বিদেশে চলে যায়। হত্যা হওয়ার ২০/২৫ দিন আগে দেশে আসে। আর এলাকায় এসেই বেলে মোড়ে কৃষকদল শাখা অফিস করে একের পর এক অপকর্ম করছিল।
ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ৬ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। আসামিরা সারেন্ডার করে কারাগারে রয়েছে। এদের পাঁচ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
Leave a Reply