ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নানা দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রেসক্লাব দখল করে স্থানীয় ক্ষমতাধর কয়েকজন ব্যক্তি এই দুর্নীতির রক্ষাক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে দুই ব্যক্তি—এম এ সামাদ ও নাজমুল হুদা রিপনকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ ঘনীভূত হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই দুই ব্যক্তি জুলাই-আগস্ট মাসের কথিত “গণঅভ্যুত্থানের” পরে হঠাৎ করে সাংবাদিক পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির নাম ব্যবহার করে তারা হরিণাকুন্ডু প্রেসক্লাব দখল করে নেন এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতিকে ঢাল দিয়ে সুবিধাভোগী হয়ে উঠেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে টিআর, কাবিখা, ৪০ দিনের কর্মসূচি এবং উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই দুর্নীতিকে আড়াল করতে কথিত সাংবাদিকরা বিভিন্ন চেয়ারম্যান ও অফিসের সাথে আঁতাত গড়ে তোলে এবং নিয়মিত সুবিধা গ্রহণ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটির সভাপতি সাহিদুল এনাম পল্লব ভাইনা ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে দেখেন। প্রকল্প পরিদর্শনের পরদিন ২৩ জুন সোমবার একটি অপরিচিত নাম্বার (০১৭১১৩২৩৯৪৫) থেকে তাকে ফোন করে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি হরিণাকুন্ডু গিয়েছেন। কথিত সাংবাদিক রিপন ওই ফোনে হুমকিমূলক সুরে জানায়, হরিণাকুন্ডুর সব প্রকল্প তারা দেখভাল করে এবং সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে হলে তাদের অনুমতি লাগবে।
রিপন আরও জানায়, তার পরিচয় জানতে হলে বিএনপির ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের কাছ থেকে খোঁজ নিতে হবে। এই বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মজিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
“বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এই ধরনের কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় এবং এ ধরনের অপকর্মের দায় দল নেবে না। সাংবাদিকদের হুমকি বা বাধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই। আপনারা নির্ভয়ে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করুন। তারা আমার নাম ব্যবহার করেছে কেন, সেটাও আমার কাছে বোধগম্য নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“যারা সাংবাদিকদের প্রশ্ন করছেন তারাই আসলে সাংবাদিক কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। হরিণাকুন্ডুর কোনো দুর্নীতির তথ্য থাকলে প্রকাশ করতেই পারেন।”
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করেন, এই দুই ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা হঠাৎ করেই বদলে গেছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণ ও দুর্নীতির সুবিধাভোগী হওয়ার অভিযোগ দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
হরিণাকুন্ডু উপজেলায় সাংবাদিকতার পবিত্রতা রক্ষায় প্রশাসন ও সাংবাদিক সমাজের আরও সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা গনতান্ত্রিক শ্রমিক দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত
Leave a Reply