নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গর্ব, বেদনা ও সাহসিকতার এক অনন্য ইতিহাস বহনকারী ১৮ এপ্রিল — বড়াইবাড়ি দিবস।
শুক্রবার কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হলো ‘বড়াইবাড়ি দিবস’। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও সাধারণ মানুষের এক ঐতিহাসিক প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল বড়াইবাড়ি গ্রামে। সেই স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর এই দিনটিকে কেন্দ্র করে পালন করা হয় নানা কর্মসূচি।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ও শহিদদের স্বরণে পুষ্পমাল্য অর্পনের মাধ্যমে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। পরে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধারা। অনুষ্ঠানে বড়াইবাড়ির সেই সাহসিক যুদ্ধে শহীদ বিজিবি সদস্যদের পরিবারকে সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) প্রদান করা হয়।
২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোররাতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ অবৈধভাবে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে বড়াইবাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর অতর্কিত হামলা ও নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। ঘুমন্ত মানুষগুলো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলার শিকার হন। বিএসএফ ওই গ্রামের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেসময় আতঙ্কে স্থানীয়রা পালিয়ে গেলেও, পরবর্তীতে সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিনের নেতৃত্বে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১২ সদস্য এবং স্থানীয় জনগণ বিজিবির সঙ্গে একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে বিএসএফ-এর ১২ জন সদস্য নিহত হন এবং বাংলাদেশের ৩ জন বিজিবি সদস্য শহীদ হন। এই সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ি দিবস’।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বড়াইবাড়ির এ গৌরবময় ইতিহাসকে জাতির সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং দিবসটিকে ‘জাতীয় বড়াইবাড়ি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও জানান।
Leave a Reply