1. admin@dashani24.com : admin :
  2. alamgirhosen3002@gmail.com : Alamgir Hosen : Alamgir Hosen
  3. aminulbahar3331@gmail.com : Md. Aminul Islam : Md. Aminul Islam
  4. a01944785689@gmail.com : Most. Khadiza Akter : Most. Khadiza Akter
  5. afzalhossain.bokshi13@gmail.com : Md Haurn Or Rashid : Md Haurn Or Rashid
  6. liton@gmail.com : Md. Liton Islam : Md. Liton Islam
  7. r01944785689@gmail.com : Rashadul Islam Rony : Rashadul Islam Rony
  8. lalsobujbban24@gmail.com : Md. Shahidul Islam : Md. Shahidul Islam
রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আজ কামালপুর মুক্ত দিবস দিনাজপুরে মকবুল-মুন্সি’র মৃ’ত্যু’তে:কর্নেল (অব:) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী সহ বিভিন্ন মহলের শোক বকশীগঞ্জে অবৈধভাবে সার সংরক্ষণে জরিমানা! নালিতাবাড়ীতে ২১ হাজার জাল টাকাসহ এক যুবক আটক যশোর শহরে ফ্ল্যাট দখল চাঁদাবাজি বোমা হামলা, হত্যার হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলছে আধুনিক ইমেজিং প্রযুক্তি বীরগঞ্জে ধানের শীষের পক্ষে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুরে পুলিশ সদস্যদের নির্বাচনী দায়িত্বে দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ শুরু মৌলভীবাজার হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বরখাস্তাদেশ স্থগিত- বহাল রাশেদা চট্টগ্রামে হেযবুত তওহীদের কর্মী সম্মেলন কুড়িগ্রামে এনসিপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন আহ্বায়ক মুকুল, সদস্য সচিব মাসুম

ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জের ‘যতই কষ্ট হোক সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করব’ – আবুল কাশেম

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৪ বার পঠিত
6

মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও সদর প্রতিনিধিঃ‘যতই কষ্ট হোক সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করব’
জন্মের কয়েক মাস পর অগ্নিদুর্ঘটনায় আবুল কাশেমের (৪৭) ডান পা পুড়ে যায়। বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারস্ত হলেও অর্থের অভাবে পরবর্তীতে আর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তার পরিবারের। এরপর থেকে অকেজো পা নিয়েই শুরু হয় তার জীবনের পথচলা। একটি বিয়ারিং গাড়ির সাহায্যে পথে-প্রান্তরে কাজের সন্ধানে ছুটে চলছেন অবিরাম। বর্তমানে পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে কোনো মতো দিন কাটছে তার। নিজে স্কুলের বারান্দায় পা রাখতে না পারলেও সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করে পঙ্গুত্ব জয় করতে চান আবুল কাশেম। ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ পৌর শহরের ভেলাতৈড় এলাকার বাসিন্দা আজিমুল ইসলামের ছেলে আবুল কাশেম। জন্মের কয়েক মাসের মাথায় অগ্নিদুর্ঘটনায় তার ডান পা পুড়ে যায়। শত চেষ্টায়ও সুস্থ হয়ে ওঠতে পারেননি। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে সুস্থ করে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন পা ভালো করা যাবে, কিন্তু এর জন্য অনেক অর্থ গুনতে হবে। অন্যথায় অকেজো পা নিয়েই চলতে হবে কাশেমকে। হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে এত অর্থ ঘর থেকে বের করা সম্ভব হয়নি। আর নিজের জমি-জায়গা বলতে বসতভিটে ছাড়া কিছুই নেই তাদের। কষ্ট আর আফসোস নিয়ে আবুল কাশেম শৈশব-কৈশোর পার করেন। এরপর ২০০১ সালে পাশের গ্রামের পরিমা বেগমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর তারা আলাদা হয়ে যান। সংসার আলাদা হয়ে যাওয়ায় অন্ধকার নেমে আসে কাশেমের জীবনে। কিছু দিন এর-ওর কাছে সাহায্য চেয়ে কোনো মতো খেয়ে-পরে থাকতেন। পরে স্থানীয়রা কটু কথা বললে আর সাহায্যের জন্য কারো কাছে হাত পাতেননি। পরে কাজের সন্ধানে বের হলেও কেউ তাকে কাজ দিচ্ছিল না। উপায়ন্তর না পেয়ে নিজেই গতি বাড়াতে তৈরি করেন একটি বিয়ারিং গাড়ি। এ গাড়ি নিয়েই ছুটে চলেন বিভিন্ন প্রান্তে কাজের সন্ধানে। প্রতিদিন সকালে বিয়ারিং গাড়িতে বসে দুই হাতের সাহায্যে কাজে বের হন। সারাদিন ইট ভেঙে যে মজুরি পান তা দিয়েই চলে তার পাঁচ সদস্যের পরিবারের সংসার ও দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। আবুল কাশেমের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে বাঁধন ইসলাম (১৮) প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। মেজো ছেলে করিমুল ইসলাম (১২) পীরগঞ্জ জামতলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় সপ্তম শ্রেণি ও ছোট ছেলে আরিফুল ইসলাম (৭) পীরগঞ্জ ভদ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। আবুল কাশেমের প্রতিবেশী লিমন জানান, তিনি খুবই গরিব। অন্য দশ জনের মতো হাঁটাচলা করতে পারে না। বিয়ারিং গাড়ির সাহায্যে কাশেম হাটবাজার ও কাজে যাতায়াত করেন। সরকারের উচিৎ কাশেমকে সাহায্য করা। এক হাতে ইনহেলার আর অন্য হাতে খুন্তি, এভাবেই সংসার চালান বৃদ্ধ আরেক প্রতিবেশী আবু তারেক বলেন, অতিকষ্টে জীবন-যাপন করছে কাশেমের পরিবার। একটি বিয়ারিং গাড়ির সাহায্যেই তার জীবন টিকে আছে। শত কষ্টের মাঝেও তিনি তার সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ রাখেননি। তার কাছে আমাদের শেখার আছে। সব কিছু হাসিমুখে মেনে নেন। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে পরিবারটি সচ্ছল হবে।
পীরগঞ্জ বাজারের দোকানদার মশিউর রহমান বলেন, আবুল কাশেমকে আমি ছোট থেকেই চিনি। সে খুবই গরিব। তার জমি জায়গা বলতে কিছুই নেই। তিন সন্তানের দুই সন্তান লেখাপড়া করছে। কাশেমের একটা পা ছোট থাকতেই পুড়ে যায়। তখন থেকেই লাঠির ওপর ভর করে চলাফেরা করছে। এরপর একটা বিয়ারিং গাড়ি বানিয়ে বিভিন্ন স্থানে ইট ভাঙার কাজ করে। আমার দোকানেও সে বাজার করে। খুব দরিদ্র। অনেক সময় বাজার করার মতো টাকা থাকে না। তবে জনপ্রতিনিধি ও সরকারের উচিত তার পাশে দাঁড়ানো। কাশেম সাহায্য পাওয়ার যোগ্য। কাশেমের স্বজনরা জানান, জন্মের কয়েক মাস পর আগুনে পুড়ে যায় তার ডান পা। এরপর অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তবে এই পঙ্গুত্ব নিয়ে হার মানেননি কাশেম। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এই পঙ্গুত্বকে শক্তি ভেবে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলশিক্ষিকা আজমা আক্তার বলেন, কাশেমের এই জীবনযুদ্ধ সমাজের কাছে একটি বড় অনুপ্রেরণা। তাকে দেখে আমাদের শেখা উচিত। অন্যের কাছে হাত না পেতে নিজে কর্ম করে রোজগার করে সংসার চালাচ্ছেন। তার সন্তানরাও মেধাবী। এসএম মনিরুজ্জামান নামে এক সমাজ উন্নয়ন কর্মী বলেন, সমাজের সুস্থ-সবল মানুষগুলো যেখানে চামচামি, দুর্নীতি, চুরি-ডাকাতি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সেখানে কাশেম শারীরিকভাবে অক্ষম হয়েও টানছেন সংসারের হাল। অন্যরা যেখানে চুরি-ডাকাতি করেও সফলতা না পেয়ে ক্ষুব্ধ সেখানে শারীরিক অক্ষমতা নিয়েও ২২ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধ। এই কাশেমরা আমাদের সমাজে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন চিরকাল। আবুল কাশেম বলেন, বিয়ের পর পরিবার থেকে আমাকে আলাদা করে দেয় আমার মা-বাবা। এরপর মানুষের কাছে চেয়ে খেতাম। একদিন এক লোক বলল ভিক্ষা করে আর কতদিন খাবি? পরে একটি বিয়ারিং গাড়ি তৈরি করে দুই হাতের সাহায্যে চলাচল করছি। অনেক সময় কাজে যেতে পারি না। কষ্ট হয়। তারপরও সন্তানের লেখাপড়া ও তাদের খাওয়ার কথা চিন্তা করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। ইট ভাঙার কাজ করে যে মজুরি পাই তা দিয়েই কোনো মতো খেয়ে দিন পার করি। মাঝে মধ্যে আমার বড় ছেলে মাঠে কাজ করে আমাকে সাহায্য করে। তিনি আরও বলেন, নিয়ত করেছি কারও কাছে হাত পেতে সাহায্য চাইবো না। প্রতিদিন তো আর ইট ভাঙার কাজ মেলে না। নিজের অনেক স্বপ্ন ছিল স্কুলে যাব, উচ্চশিক্ষিত হব, কিন্তু আফসোস সেই স্বপ্ন আর আমার পূরণ হলো না। তাই যতই কষ্ট হোক না কেন সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করব। তবে সরকারিভাবে যদি আমাকে একটু সাহায্য করা হয় তাহলে আমার অনেকটা উপকার হয়। অনেকের কাছে গিয়েছিলাম সাহায্যের জন্য, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।
পীরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা এসএম রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে বলেন, আবুল কাশেমকে আমরা চিনি। তার একটা পা আগুনে পড়ে যায়। এরপর থেকেই সে বিয়ারিং গাড়ির সাহায্যে চলাফেরা করছে। আবুল কাশেমকে সমাজসেবা অফিসে ডাকা হয়েছে। তার কী কী সমস্যা তা শুনে সাহায্য করা হবে।

আরও পড়ুনঃ ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জে সৎভাইকে মেরে ভুট্টাক্ষেতে ফেলে রাখার অভিযোগে কিশোর আটক

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 Dashani 24
Theme Customized By Shakil IT Park