নিজস্ব প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম তারা:কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় অকৃষি খাস জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির নির্মাণে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। তবে প্রশাসনের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত অস্থায়ী মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজিবপুর উপজেলার ১নং রাজিবপুর ইউনিয়নের পোস্ট অফিস রোডের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশে দীর্ঘদিন ধরে কোনো স্থায়ী মন্দির নেই। ফলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে প্রতি বছর ধর্মীয় উৎসব পালনের জন্য অন্যের দোকানঘর ভাড়া নিয়ে অস্থায়ীভাবে পূজা করতে হতো।
এই সমস্যার সমাধানে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল চন্দ্র স্থানীয়দের সম্মতিতে চর রাজিবপুর মৌজার খতিয়ানভুক্ত ৯১৭৬ নম্বর দাগে ০.০৫০০ একর অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করেন। প্রস্তাবটি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং পরবর্তীতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা–২০২৫ উপলক্ষে পূজা উদযাপন কমিটি ওই জমিতে পূজা করার অনুমতি চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মৌখিকভাবে অনুমতি দেন। কিন্তু গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে মন্দির নির্মাণ শুরু হলে স্থানীয় মো. রফিকুল ইসলাম মাস্টার বাঁধা দেন। তিনি দাবি করেন, উক্ত জমি তাঁর নামে রেকর্ডভুক্ত এবং দাবি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে স্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা যাবে না। তবে দুর্গাপূজার জন্য অস্থায়ী মণ্ডপ গড়তে তাঁর আপত্তি নেই বলেও জানান।
পরিস্থিতি জানাজানি হলে পূজা উদযাপন কমিটি বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবগত করেন। তিনি প্রথমে ডেকোরেটরের মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে পূজা করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির ঝুঁকি বিবেচনা করে পরে বাঁশ ও টিনের কাঠামো দিয়ে অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরির অনুমতি দেন।
বর্তমানে স্থানীয় মন্দির কর্তৃপক্ষ বাঁশের খুঁটি ও টিনের বেড়া দিয়ে অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরি সম্পন্ন করেছে। পূজা উদযাপন কমিটি জানিয়েছে, প্রশাসনের সহযোগিতায় এ বছরও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানীয়দের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করে রাজিবপুরে স্থায়ী মন্দির নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো জটিলতা তৈরি না হয়।
Leave a Reply