
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ খানসামায় দলীয় নেতার মৃত্যুতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ উত্তেজনা,,
দিনাজপুরের খানসামায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন সরকারের (৭২) মৃত্যুকে ঘিরে উপজেলা বিএনপি র দুই-পক্ষের বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। বুধবার (৬আগস্ট) সকালে পাকেরহাট গ্রোয়ার্স মার্কেট এলাকায় নিজ বাড়িতে মারা যান বিএনপি নেতা শরীফ উদ্দিন সরকার। উপজেলা বিএনপির এক পক্ষ মিয়া গ্রুপের নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন,কর্নেল গ্রুপের অনুসারীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীফ উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অপর পক্ষ কর্নেল গ্রুপ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন সরকার খানসামা উপজেলা বিএনপি র সদস্য,উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক এবং আংগারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বলে জানা গেছে। গত ১৮জুলাই ভোররাতে মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন শরীফ উদ্দিন সরকার। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে ৩ আগস্ট তিনি বাড়িতে আসেন।
আজ বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ হামলার ঘটনায় গত ২১ জুলাই শরীফ উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইশতিয়াক আহমেদ শুভ বাদী হয়ে কর্নেল ‘অব’ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মিয়া গ্রুপের অনুসারী জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন,‘কর্নেল গ্রুপের অনুসারীরা পরিকল্পিতভাবে প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরীফ উদ্দিন সরকারের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনানুগ ও সাংগঠনিক শাস্তি দাবি করছি।’
অন্যদিকে কর্নেল ‘অব’মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন,‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন সরকারের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর ছেলে ছাত্রনেতা শুভ সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। সেই পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে ঘটনার পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমাদের জড়িয়ে মিথ্যে মামলা করে হয়রানি করছে। এই হামলার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যদিও কোনো মৃত্যুই কাম্য নয়। তবে তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা অপরাজনীতি করছে,এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
প্রসঙ্গত,
খানসামা উপজেলা বিএনপি বর্তমানে দুই-ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ বিএনপি র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারী, অন্যপক্ষ বিএনপির সংসদ সদস্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩ কর্নেল ‘অব’ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী। এর আগে গত ১১ জুলাই রাতে ভাবকী ইউনিয়নের কাচিনীয়া বাজারে কর্নেল গ্রুপের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে,যাতে ২৫ জন আহত হন এবং ৫০টির বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এর পর থেকে উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি- নজমুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের বিষয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবারের আবেগ ও অবস্থান বিবেচনায় আমরা সংবেদনশীল রয়েছি। তাই পরিবারের আপত্তি থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন হবে। খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান সরকার সংবাদকর্মী
জানান, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন সরকারের দাফন সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও খবরনড়াইলের কালিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ সাত জনের নামে চাঁদাবাজির মামলা
Leave a Reply