1. admin@dashani24.com : admin :
  2. alamgirhosen3002@gmail.com : Alamgir Hosen : Alamgir Hosen
  3. aminulbahar3331@gmail.com : Md. Aminul Islam : Md. Aminul Islam
  4. a01944785689@gmail.com : Most. Khadiza Akter : Most. Khadiza Akter
  5. afzalhossain.bokshi13@gmail.com : Md Haurn Or Rashid : Md Haurn Or Rashid
  6. liton@gmail.com : Md. Liton Islam : Md. Liton Islam
  7. r01944785689@gmail.com : Rashadul Islam Rony : Rashadul Islam Rony
  8. lalsobujbban24@gmail.com : Md. Shahidul Islam : Md. Shahidul Islam
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আজ কামালপুর মুক্ত দিবস তাফসীরুল কুরআন মাহফিল সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা সম্পন্ন কৃতিমান চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন নালিতাবাড়ীতে আমগাছে ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কক্সবাজার টেকনাফের বিজিবি’র অভিযানে গাঁজাসহ তিন নারী আটক রাজিবপুরে মর্মান্তিক ঘটনা: ৪ বছরের শিশু ফেমার লাশ ২৪ ঘণ্টা পর নদী থেকে উদ্ধার হালুয়াঘাট সীমান্তে আটকভারত থেকে পুশইনকৃত ৬ রোহিঙ্গা বাগেরহাট-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী রাহাদ ঝিনাইদহে ডাকসুর হল ভিপি আবু নাঈমকে সংবর্ধনা কালাইয়ে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে নির্বাচনী গণসংযোগ যশোর ডাকাতিয়ায় চোর সিন্ডিকেটের হামলায় ভুক্তভুগি যুবক নিহত

নড়াইলে জুলাইয়ে ৬জন সহ ১৫ মাসে ১৮ জনের মৃত্যু

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ বার পঠিত

নড়াইল প্রতিনিধিঃ দুপুরে আফিয়া ও মিমের মা পারিবারিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এই সুযোগে কাওকে কিছু না বলে একই বংশের আফিয়া (১০) ও মিম (৮) বাড়ির পাশে নতুন খনন করা পুকুরে গোসল করতে নামে।

প্রায় ১ ঘন্টা পর পরিবারের লোকজন তাদের কোথাও না পেয়ে খুঁজতে খুঁজতে মৃত অবস্থায় মৃত অবস্থায় ডোবা থেকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি গত ১৮ জুন সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের বেদভিটা গ্রামের। আফিয়ার বাবার নাম শাহীদ ফকির ও মিমের বাবার নাম আল-আমিন ফকির।

তিন দিন পর ঈদুল আজহা। ২২ মাস বয়সি আপন চাচাতো ভাই রাহাদ ও সম বয়সী রিহান বাড়ির উঠানে হৈ হুল্লোড় করে বেড়াচ্ছে। তাদের মা-চাচীরা পারিবারিক কাজে ব্যস্ত। সকাল ১০ টার দিকে রাহাদ ও রিহান অভিভাবকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাড়ির সামনের পুকুরে নেমে পড়ে। যখন তাদের খোঁজ পড়লো তখন তারা আর বেঁচে নেই। ৪ জুন কালিয়ার চাঁচুড়ী ইউনিয়নের আটলিয়া গ্রামে মর্মান্তিক মৃত্যুটি ঘটে। রাহাদের বাবার নাম শিমুল শেখ ও রিহানের বাবার নাম রিয়াজ শেখ।


শুধু এ দু’টি ঘটনাই নয় এ বছরের জুন মাসেই নড়াইলে পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে ৬ জন শিশু। এ ছাড়া গত ১৫ মাসে মারা গিয়েছে ১৮ জন শিশু-কিশোর। এর মধ্যে ৮ জন শিশু এবং ৮ জন কিশোর। এ অনাকাংখিত মৃত্যুর জন্য কেউ পরিবারের অসাবধানা বা গাফিলতি আবার অনেকে শিশুদের সাঁতার না জানাকে দায়ি করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরণের অপমৃত্যু এড়াতে সাবধানতার পাশাপাশি সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

নড়াইল আব্দুল হাই সিটি কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক মোঃ মনির মল্লিক বলেন, শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর পেছনে প্রধানত পরিবারের অসচেতনতাই দায়ি। তাদের সার্বক্ষনিক নজরে রাখা এবং সচেতন হওয়া যাতে শিশু-কিশোররা কোন ধরণের দুর্ঘটনার শিকার না হয়। এ ছাড়া তিনি পুকুর ভরাটকেও দায়ি করেন। এ জন্য পুকুর ভরাট না করে শহরাঞ্চলে সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। তিনি শিশুদের নিরাপদ রাখা এবং সার্বিক বিকাশে পরিবারকে আরো দায়িত্বশীল ও সতর্ক হওয়া উচিত বলে মনে করেন।

এ বছরের ১১ জুন লোহাগড়ার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের ঝিকড়া গ্রামের আবির তাজ ইমামের মেয়ে আয়েশা (২) পুকুরে ডুবে মারা যায়। ১০ জুন কালিয়া পৌরসভার ঘোষ পাড়া এলাকার বাসিন্দা তারক ঘোষের সন্তান ৫ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র শ্রেষ্ঠ ঘোষসহ তিন বন্ধু বাড়ির পাশের নবগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়ে পাুনতে ডুবে মারা যায়। পরিবার জানায় সে সাঁতার জানতো। ১ এপ্রিল লোহাগড়ার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই গ্রামে নানা বাড়িতে সবার অগোচরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে ফাতেমা সিদ্দিকা (৭) মারা যায়। ফাতেমা পার্শ্ববর্তী চোরখালি গ্রামের মহসিন মোল্যার মেয়ে।

২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর লোহাগড়ার শালনগর ইউনিয়নের পার-শানগর গ্রামের ফজলু রহমানের কন্যা ফাতেমা খানম (২) পানিতে ডুবে মারা যায়। জানা যায়, সকাল ১০ টার দিকে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। দুপুর ১২ দিকে বাড়ির পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। ৫ সেপ্টেম্বর লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ছত্রহাজারি গ্রামে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে আয়েশা (৩) পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। সে পার্শ্ববর্তী শামুকখোলা গ্রামের সৈয়দ বিল্লাল আলীর কন্যা। জানা যায়, সকাল ৮ টার দিকে বাড়ির উঠানে খেলছিল আয়েশা। সকাল ৯ টার দিকে বাড়ির পাশে ডোবায় তার লাশ পাওয়া যায়।

১ আগষ্ট সদরের কলোড়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের শফিকুল বিশ্বাসের ছেলে ১৫ মাস বয়সী আকিবের বালতির পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জানা যায়, আকিব বাড়ির উঠানে পানি ভর্তি বালতির কাছে খেলা করছিল। এ সময় বালতি ধরে দাঁড়াতে গিয়ে অসাবধানতাবশত শিশুর মাথা বালতির নিচের দিকে চলে যায়। বিষয়টি কারো নজরে না পড়ায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ২৬ জুন নদীতে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে গিয়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র আসমাউল মীরের মৃত্যু হয়। জানা যায়, নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর এলাকার বিল্লাল মীরের ছেলে আসমাউলসহ তিন বন্ধু বাড়ির পাশে চিত্রা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিঁখোজ হয়। পরে কয়েক ঘন্টা পর তার লাশ পাওয়া যায়।

১৪ মে নড়াইল শহরের বরাশোলা এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে ৫ম শ্রেণির ছাত্র রাজ শেখ চিত্রা নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। জানা যায়, বাড়ির পাশে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলে বাড়ি ফেরার পথে রাজ স্থানীয় বরাশোলা ঘাটে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে নামলে পানিতে তলিয়ে যায়। নিহতের পরিবার জানায়, সাইফুর ওই দিনই প্রথম নদীতে নামে গোসলের জন্য। ১১ মে সদরের নাকশি এলাকার সাইফুল শিকদারের একমাত্র ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র রায়হান শিকদার (১৮) নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। জানা যায়, সদরের ধোন্দা গ্রামে মামা বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দুপুরে সমবয়সিদের সাথে ফুটবল খেলে চিত্রা নদীতে গোসল করতে নামে। রায়হান ভালো সাঁতার না জানায় সে একটি কলা গাছের অংশ বুকে জড়িয়ে ভেসে ভেসে সাঁতার কাটছিল।

একপর্যায়ে সে নদীতে তলিয়ে গেলেও বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। ২০ এপ্রিল সদরের বাহিরগ্রামের নূর জালাল মোল্যার দু’সন্তান তিন্নি (৫) ও তানহা (৩) ঘেরের পানিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। জানা যায়, তিন্নি ও তানহা বাবা-মায়ের হাত ধরে বাড়ি সংলগ্ন নিজেদের ঘেরে যান এবং কিছুক্ষণ পর বাবা-মা ফিরে আসেন। সন্ধ্যার পর তিন্নি ও তানহাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে সেই মাছের ঘেরে গিয়ে দেখতে পান তারা দু’জনই পানিতে ভাসছে।

কালিয়ার চাঁচুড়ী ইউনিয়নের আটলিয়া গ্রামে পানিতে ডুবে নিহত রিহানের বাবা রিয়াজ শেখের ভাষ্য, বাড়িতে সবাই কাজে ব্যস্ত ছিল। যে কারণে আমরা কেউ রিহান এবং ওর চাচাতো ভাই রাহাদ কোথায় গেল তা খেয়াল করতে পারিনি। সকাল ১০ টা পর্যন্ত তারা বাড়ির উঠানেই খেলা করছিল। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে দুই ভাইকে বাড়ির পাশের ডোবা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি।

নড়াইল শহরের বরাশোলা এলাকায় চিত্রা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিহত ৫ম শ্রেণির ছাত্র রাজ শেখের কাকা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বাড়ির পাশে নদী হলেও রাজ কখনো নদীতে নামেনি। সে সাঁতারও জানে না। ওইদিনই নিয়তি তাকে সেখানে ডেকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে নড়াইল জেলা ক্রীড়া অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে বাৎসরিক সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য মাসব্যাপি একটি ব্যবস্থা থাকে।

এবারও গত মে মাসে ৮০ জনের বেশি শিশু-কিশোরকে সাঁতার শেখানো হয়েছে। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে জুলাই মাস থেকে প্রতি শুক্র ও শনিবার নড়াইল পৌরসভার পেছনে কালিদাস ট্যাংক পুকুরে পানি জীবাণুমুক্ত করে সাঁতার শেখানোর চেষ্টা করছি। স্থায়ীভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কিভাবে সাাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় সে জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলবো। কারণ সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষককে একটি সম্মানী দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের সাঁতার শেখাতে আগ্রহী নন এবং এ ক্ষেত্রে তাদের গাফিলতিও রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, সাঁতার শেখা প্রত্যেক শিশুর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সরকারিভাবে আমরা সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে উপজেলা পর্যায়ে সাঁতার শেখানোর আইডিয়াটি সময়োপযোগী। কারণ দূর থেকে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জেলা পর্যায়ে সাঁতার শিখতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে জেলা ক্রীড়া অফিসারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তিনি গ্রামীন পর্যায়ে শিশুদের সাঁতার না শিখিয়ে তাদের পুকুরে ছেড়ে না দিতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেন।

আরও পড়ুনঃ নরসিংদীতে বেলাবতে ট্রাকচাপায় রিকশাভ্যান আরোহী ব্যবসায়ী নিহত

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 Dashani 24
Theme Customized By Shakil IT Park