মালিকুজ্জামান কাকা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠিক কবে তা এখনি জানা না গেলেও প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বসে নেই রাজনৈতিক দলগুলো। যশোরে তীব্র প্রতিযোগিতায়। শার্সা বেনাপোল তার ব্যাতিক্রম নয়।
শার্সায় এখন রাজপথে বিএনপি জামায়াতের নেতা কর্মীরা। এরা একদিকে দল গোছাচ্ছে। আরেক দিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের পক্ষের লোকজন। জোরালো মাঠে রয়েছেন ধানের শীষের পক্ষে মফিকুল হাসান তৃপ্তি ও দাঁড়িপাল্লার পক্ষে মাওলানা আজিজুর রহমান। মাঠে আরো রয়েছেন বিএনপির শার্সা উপজেলা উপদেষ্টা খাইরুজ্জামান মধু ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির।
যশোর-১ (শার্শা) আসনটি বাংলাদেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে পরিচিত। এখানে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ অন্তজার্তিক স্থলবন্দর বেনাপোল। গত ১৫ বছর এই আসনটি ছিল আওয়ামী লীগের দখলে। তবে এই আসনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিএনপি মাঠ পর্যায়ে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। পিছিয়ে নেই জামায়াত ইসলামী।
তবে জামায়াত-বিএনপি পৃথকভাবে নির্বাচন করছে এই শার্সা যশোর-১ আসনে। আওয়ামী লীগ যদিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। তবুও তারা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারলে, আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের ভোট পড়বে বিএনপি প্রার্থীর ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে। এমনটি ই ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষত্রে এই আসনটি বিএনপির পক্ষে যাবে, এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এই আসনে বিএনপির পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা তুঙ্গে। বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, শার্শা উপজেলা বিএনপির উপদেস্টা খায়রুজ্জামান মধু, ও শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের সকলের প্রতীক ধানের শীষ।
অন্যদিকে জামায়াত ইসলামী থেকে সম্ভাব্য একক প্রার্থী হিসেবে মাওলানা আজিজুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য। জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গোপনে তার নির্বাচনী মাঠে কাজ শুরু করেছেন। এরা দাড়িপাল্লা প্রতীকের গণসংযোগ করছেন।
বিএনপির প্রবীন নেতা কর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ এখানে তীব্র। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থীই বিজয়ী হবেন। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা আগের ২০ বছরের চেয়ে অনেক শক্তিশালী।
যশোর-১ আসনটি শার্শা উপজেলা নিয়ে গঠিত। বেনাপোল পোর্ট থানার আওতাধীন এলাকা এর সাথে যুক্ত। শার্শা উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৮০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৪৪০ জন পুরুষ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৮৮৮৩ জন। মোট ইউনিয়ন সংখ্যা -১১ টি, ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১০২ টি। পুরষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। নির্বাচনী মাঠে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি দেখে আওয়ামী লীগও রয়েছে সতর্ক অবস্থানে।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপি যদি যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য তরুণ প্রার্থী দিতে পারে এবং দলীয় ঐক্য বজায় থাকে, তবে এই আসনটি যাবে বিএনপির ঘরে।
অন্য দিকে জামায়াত ঘরানার মানুষ জন বলছেন, শার্সায় বিএনপি ৩/৪টি ধারায় গ্রূপিংয়ে বিভক্ত। নিজ দলীয় মারামারিতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে অদ্যবধি খুন, আহতের সংখ্যা শতাধিক। বেনাপোল,নাভারণ, উলসী, ধলদাহ, রামপুর, বাগাচড়া, পুটখালী, কোন্দপপুর, নিজামপুর, লক্ষনপুর, শিকারপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিএনপি বনাম বিএনপি হানাহানিতে জনজীবন অতিষ্ট। বি এন পি কতৃক বিএনপির নেতা কর্মীর বাড়িঘর ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর কম নয়। মামলাও অগণিত প্রায়। এসব কারণে যদি জামায়াত প্রার্থীকে জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
Leave a Reply