বিশ্বজিৎ চন্দ্র সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি:গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার তারাইল-সালুকা মৌজায় প্রায় ১.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল সংস্কারের নামে চলছে লোক দেখানো কার্যক্রম ও দুর্নীতির অভিযোগ। খাল খননের নামে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষার মৌসুমে পানি ভর্তি খালে এস্কেভেটর (ভেকু) নামিয়ে কেবলমাত্র কচুরিপানা তুলে পাশের কৃষিজমিতে ফেলা হচ্ছে। এতে জমির ফসল নষ্ট হলেও প্রকৃত খনন কার্যক্রম হচ্ছে না। ফলে খাল সংস্কার নয়, বরং সরকারি অর্থ লোপাটের ষড়যন্ত্র চলছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন,
“এভাবে পানির মধ্যে লোক দেখানো কাজ করে টাকা তোলা হচ্ছে। এতে জনগণের কোনো উপকার হবে না, বরং আমাদের চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
অন্য একজন বলেন,
“এটা প্রকৃত খাল খনন না, শুধু লোক দেখানো নাটক। এর পেছনে দুর্নীতির গন্ধ স্পষ্ট।”
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এসডিও জানান,
“যতটুকু কাজ হবে, ততটুকুই বিল দেওয়া হবে, তদারকিও থাকবে।”
তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি আর কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা তাইজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,
“আপনারা রিপোর্ট করতে চাইলে করেন। পরে কী হবে, সেটা আমরা বুঝে নেবো।”
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেন গুরু ও ঠাকুর মেম্বার নামের দুই জনপ্রতিনিধিও। তারা বলেন,
“আপনারা রিপোর্ট করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমরা বোঝাবো। তারাই আমাদেরকে পানির মধ্যে খাল কাটার অনুমতি দিয়েছে।”
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, টুঙ্গিপাড়ার এসও শাহিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি অফিসেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর দাবি, শুধু এই প্রকল্প নয়—টুঙ্গিপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি খাল একইভাবে শুধু কাগজে-কলমে খনন হয়েছে। বাস্তবে কার্যকর কোনো উন্নয়ন হয়নি। তারা সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকল্প কার্যকারিতা যাচাই করে প্রকৃত সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুনঃ রায়পুরায় ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি
Leave a Reply