প্রতিনিধি মোঃমোরশেদ আলম চৌধুরীঃ বান্দরবানে ২৪ ঘন্টায় ২২২ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড, উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন
টানা বৃষ্টিপাতে শংঙ্কা আর আতংক বাড়ছে পাহাড়ের জনজীবনে
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে টানা ২ দিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত এখনো অব্যাহত আছে।কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে দমকা ঝড়ো হাওয়ার সাথে ভারী বর্ষনের ফলে বন্যার আতংকে শংঙ্কায় আছেন জেলার জনসাধারণ।
এছাড়া অপরিবর্তিত আবহাওয়া ও টানা বৃষ্টিপাতের কারনে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী জনসাধারণের ঘুম নেই চোখে।গতকাল রাতের ভরী বর্ষনে অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
(২৯শে মে) দিবাগত রাত হতে শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ১২ পর্যন্ত জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে,এসময় জেলার পৌর এলাকার বনরূপা, হাফেজঘোনা, মেম্বার পাড়াসহ বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।এতে অনেকটা বিপাকে পড়েন বসবাসকারী জনসাধারণ।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে সকালে বান্দরবান-রুমা সড়কের মুরুং বাজার, খুমী পাড়া এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধ্বসে রাস্তার উপর পড়ায় জেলা সদরের সাথে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
এছাড়া বৃষ্টিপাতের কারনে বেশ কয়েকটি জায়গায় পাহাড়ের মাটি ধসে রাস্তার উপর পড়ায় যানবাহন চলাচলের বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে।
টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন ও বান্দরবান পৌরসভার উদ্যোগে সচেতনতা মূলক মাইকিং অব্যাহত আছে।ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বান্দরবান জেলার সকল উপজেলায় অস্থায়ী ২২০ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে,এর মধ্যে,বান্দরবান সদরে – ৪৬ টি,রুমা উপজেলায়- ২৮ টি,রোয়াংছড়ি উপজেলায় – ১৯,থানচি – ১৫ টি,লামা – ৫৫ টি,আলীকদম -১৫ টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় – ৪২ টি সহ সর্বমোট ২২০ টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল জানান গতকাল সন্ধ্যা হতে আজ সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জেলায় ২২২ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।টানা বৃষ্টিপাতের কারনে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা সহ পাহাড় ধসের সম্ভাবনা আছে।
এদিকে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামল দেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে বলে নিশ্চিত করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক, শামীম আরা রিনি।
তিনি বলেন টানা বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ভুত সকল পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।ইতিমধ্যে উপজেলার সকল নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।জেলা প্রশাসন সহ উপজেলা প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
জেলার পাহাড় অধ্যুষিত ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণ কে ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সড়ে যেতে বলা হচ্ছে। এ জন্য জেলা ও উপজেলায় মোট ২২০ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ধারাবাহিক টানা ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার সকল জনসাধারণ কে আতংকিত না হয়ে সচেতন ভূমিকা পালন ও দায়িত্বশীল হওয়া এবং পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।
পাহাড় ধ্বসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
এছাড়া উদ্ভুত পরিস্থিতি ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ ও সংবাদ ও সাহায্য, আদান-প্রদানের জন্য,একজন অতিঃজেলা প্রশাসক এবং একজন সহকারী কমিশনার এর তত্বাবধানে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অভ্যর্থনা কক্ষে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
আরও পড়ুনঃ পটিয়ায় বসতভিটা নিয়ে বিরোধ, দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১
Leave a Reply