ঋণের চাপে জর্জরিত হয়ে পরিশোধ করতে না পেরে শ্বশুর বাড়িতে তালা ও আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রুবেল মিয়া (৩৫) নামে এক যুবক।
এদিকে আত্মহত্যার একদিন আগে স্ত্রী আদুরিকে মোবাইলে রুবেল বলেছিলেন- ‘তোমাদের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে আমি বিষ খেয়ে মরমু।’
বুধবার মধ্যরাতে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী হারোয়াবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ১১ বছর আগে সানন্দবাড়ী নবিনাবাদ গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়ার সঙ্গে হারুয়াবাড়ি গ্রামের খাঁন বাহাদুরের মেয়ে আদুরির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে।
রুবেল রানা গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভাঙ্গারির ব্যবসা করে সংসার চালাতেন। সংসারের অভাব মেটাতে স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেন তিনি। ঋণ পরিশোধের জন্য ঘন ঘন চাপ দিতে থাকেন পাওনাদাররা।
কিস্তির জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আদুরি কয়েক দিন আগে বাপের বাড়ি চলে আসেন। বুধবার রাতে শ্বশুরবাড়ি এসে শ্বশুরবাড়ির দরজার বাইরে থেকে আটকে দিয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে সেখানে বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন। আশপাশের লোকজন আগুন দেখে নেভাতে এসে দেখেন রুবেল মিয়া বিষ খেয়ে পড়ে আছেন।
স্থানীয় লোকজন রুবেল মিয়াকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে জামালপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।
সানন্দবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুর রহিম বলেন, রুবেল ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী। অভাবের সংসার ও ঋণে জর্জরিত ছিল। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে শ্বশুরবাড়িতে এসে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরহাদ আলী জানান, শ্বশুরবাড়ির ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল আটকিয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে রুবেল মিয়া বিষ খেয়ে শ্বশুরের ঘরের সামনে পড়ে ছিল।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি নাজমুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঋণের কারণে শ্বশুর বাড়ীতে এসে কেনো আত্নহত্যা করলেন তার সদুত্তর পাওয়া যায়নি কারও কাছে।
Leave a Reply