নিজস্ব প্রতিনিধি: তারিকুল ইসলাম তারাঃ কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলগুলোতে পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জিঞ্জিরার নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত করেছে নিম্নাঞ্চল। এতে দুই উপজেলার অসংখ্য গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং কৃষকদের শত শত একর জমির পাকা ও কাঁচা ধান, চিনা, মৌসুমি ফসল এবং শাক-সবজি পানিতে ডুবে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করে নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। রাতারাতি বাড়ির আঙিনা, রাস্তা-ঘাটসহ কৃষিজমি পানির নিচে চলে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা, যাদের সারা বছরের পরিশ্রমের ফল আজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
রাজিবপুরের সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন,
“এই ধানেই ছিল আমার বছরের ভরসা। এখন সব তলিয়ে গেছে। কীভাবে সংসার চালাবো বুঝতে পারছি না।”
একইভাবে রৌমারী উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন,
“মাঠের ধান পাকছিল। কাঁচা আর পাকা মিলিয়ে কয়েক একর জমির ফসল শেষ হয়ে গেছে। এখন সাহায্য না পেলে না খেয়ে মরতে হবে।”
জানা গেছে, নদীসংলগ্ন এলাকা হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এসব অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। তবে এবার বন্যার প্রকোপ অতীতের তুলনায় অনেক বেশি এবং হঠাৎ হওয়ায় প্রস্তুতির সুযোগও ছিল না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি ত্রাণ বা সহায়তা পৌঁছায়নি দুর্গতদের কাছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শন করলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
তাদের দাবি, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেন জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উপযুক্ত সরকারি সহায়তা প্রদান করে।
বন্যায় তলিয়ে যাওয়া জমিগুলোতে পুনরায় আবাদ করা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। কৃষকদের আশঙ্কা, যদি দ্রুত কোনো পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ না করা হয়, তাহলে তারা আগামী মৌসুমে ফসল ফলাতে পারবেন না, যা ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
এই দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে এবং কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এখনই প্রয়োজন প্রশাসনের তৎপরতা ও সহানুভূতিশীল মনোভাব।
আরও পড়ুনঃ রাজিবপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে স্প্রে মেশিন বিতরণ
Leave a Reply