মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় নড়বড়ে কাঠের ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই পারাপার হচ্ছে স্কুলগামী কোমলমতি শিশু সহ প্রায় সাড়ে ৪শ মানুষ। এই ব্রিজ দিয়ে পার হতে গিয়ে এরই মধ্যে শিশু শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকবার।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁও দিয়ে বয়ে যাওয়া চারাবান খাল নদীর ওপর কাঠের ব্রিজ পাড়ি দিয়ে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে (গুচ্ছগ্রাম) বসবাসরত বাসিন্দারা সহ ঐ এলাকার প্রায় সাড়ে ৪শ মানুষ প্রতিদিনই যাতায়াত করে। আর ভারি যানবাহন চলাচল করতে না পারায় ২ কিলোমিটার ঘুরে শহরে প্রবেশ করতে হয় সেখানকার মানুষদের। এতে যে কোনো সময় নড়বড়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জরুরি ভিত্তিতে এ জরাজীর্ণ ব্রিজটি মেরামত করার জোর দাবি তাদের। জানা গেছে, সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের বিকল্প রাস্তা না থাকায় ৪ বছর আগে চলাচলের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আলাউদ্দীন সহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের নিজ উদ্যোগে বরুনাগাঁও চারাবান খাল নদীর ওপর একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেন। এ ব্রিজটি নির্মাণে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটিতে যাতায়াত করায় ব্রিজের কাঠগুলো ভেঙে নড়বড়ে হয়ে গেছে।
ব্রিজটিতে লোকজন পারাপারের সময় কেঁপে ওঠে। ফলে অনেক অভিভাবক তাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছেন। ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পথচারীরা পারাপারের সময় আতঙ্কে থাকে। এরই মধ্যে স্কুল যাওয়ার পথে কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী এই সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। এলাকাবাসীরা জানান, অস্থায়ী এই কাঠের ব্রিজ দিয়ে মানুষ কোনোভাবে পার হতে পারলেও ভারি যানবাহন চলতে পারে না।
স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসলেও কেউ কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এই ব্রিজ দিয়ে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। এখন নদীতে পানি নেই কিন্তু সামনে বর্ষাকাল তখন আমরা কিভাবে এই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করব। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের ভাঙা ব্রিজটি মেরামত অথবা নতুন ব্রিজ নির্মাণ করে দিক। বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে ১২ জন নিহত ফারিয়া, মিম ও জিম নামে কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থী সাংবাদিকদেরকে বলেন, এই কাঠের ব্রিজ দিয়ে আমাদের প্রতিদিন কলেজ যেতে হয়। ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় খুব ভয় লাগে।
কারণ এটা ভাঙা। এখন তো বন্যা নেই। যখন বন্যা হয় তখন আমাদের বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। তখন যাতায়াতের কোনো রাস্তা থাকে না। আমরা পড়াশোনা করি সেজন্য শহরে যেত হয়। বন্যার সময় যেতে পারি না এই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে। দ্রুত ব্রিজটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা সাংবাদিকদেরকে বলেন, এই ব্রিজটি তাড়াতাড়ি ঠিক করে দিলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা নির্ভয়ে স্কুল যেতে পারে। বিশেষ করে বর্ষাকালে আমাদের খুবই অসুবিধা হয়।
ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস সাংবাদিকদেরকে বলেন, সরকারের গুচ্ছগ্রাম সহ স্থানীয়দের যাতায়াতের একমাত্র কাঠের ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে তা আমরা জানি। এর আগেও স্থানীয়রা আমাদের ব্রিজটি সম্পর্কে অবগত করেছিল। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এগুলো পাস হয়ে আসলেই আমরা কয়েকটি ব্রিজে হাত দেব।
আর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল সাংবাদিকদের
কে বলেন, বরুনাগাঁও গুচ্ছগ্রাম ঠাকুরগাঁও সদরের একটি বৃহৎ গুচ্ছগ্রাম। তাদের চলাচলের জন্য কাঠের ব্রিজটি খুবই নাজুক অবস্থায় আছে আমরা জানতে পেরেছি। এটা কিভাবে সংস্কার করা যায় অচিরেই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটা সিন্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই মেরামত করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ ঝিনাইদহে চাষ হচ্ছে মিষ্টি আঙ্গুর
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাদিজা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.