তারিকুল ইসলাম তারা নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে এ বছর সরিষা, ভুট্টা ও চিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সঙ্গে কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষেও ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। তবে সবজি চাষিরা আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় কিছুটা হতাশ, অন্যদিকে সরিষা চাষিরা লাভবান হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
২০ ফেব্রুয়ারী সরাসরি মাঠ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জমি জুড়ে হলুদ সরিষার ক্ষেত, সবুজ ভুট্টার গাছ আর চিনার ক্ষেতের সমারোহ। প্রতিটি গাছেই ফলন আশানুরূপ হয়েছে। কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি।
স্থানীয় সবজি চাষি আব্দুল হাকিম জানান, “এবার কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম কম থাকায় কাঙ্ক্ষিত লাভ হচ্ছে না। স্থানীয় বাজারে পাইকাররা অনেক কম দামে সবজি কিনছে, ফলে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
আরেক কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমরা পরিশ্রম করে ফসল ফলাই, কিন্তু ন্যায্য দাম না পেলে পরিশ্রমের ফল পাই না। সরকারের উচিত বাজার ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা, যাতে আমরা ন্যায্য মূল্য পাই।”
সরিষা চাষিদের জন্য এ বছরটি অত্যন্ত সফল হয়েছে। কৃষক আবুল কাশেম বলেন, “সরিষার আবাদ করে এবার আমরা ভালো লাভ পেয়েছি। ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি বাজারে দামও ভালো মিলছে। প্রতি মণ কাঁচা সরিষা ৩০০০থেকে ৩২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারছি, যা আমাদের জন্য লাভজনক।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রতন মিয়া জানান, “এ বছর আমরা প্রায় ৮০০ কৃষকের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ বিতরণ করেছি। কৃষকরা সেই বীজ ব্যবহার করে ভালো ফসল পেয়েছেন। আগামীতে আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে তারা আরও ভালো ফলন করতে পারেন।
রাজিবপুরের কৃষকরা চান, সরকার তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করুক এবং বাজার ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর হোক। সেই সঙ্গে কৃষি উপকরণের দাম সহনীয় রাখা ও প্রণোদনার পরিমাণ আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
এই বছর রাজিবপুরে বাম্পার ফলন কৃষকদের মুখে হাসি ফোটালেও, ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে তাদের পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য মিলবে না। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বাজার ব্যবস্থাপনায় নজর দেয়, তবে কৃষকরা আরও উৎসাহিত হয়ে চাষাবাদ করতে পারবেন এবং দেশের কৃষিখাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
আরও পড়ুনঃ মৌলভীবাজার শহরের চিহ্নিত মাদকসেবী দেহব্যবসায়ী জেরিন আবারও আটক জনতার হাতে
Leave a Reply