মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ হাওড়বেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার অধিকাংশ জেলেরা এখন দেশীয় পুঁটি মাছের শুঁটকি উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদের উৎপাদিত দেশীয় পুঁটি মাছের শুঁটকির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মাচায় শুঁটকি উৎপাদনে জেলেরা স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সদর ইউনিয়নের গাংকুল পাড়া লংগন নদীর তীরঘেঁষে তৈরি হচ্ছে বেশ কয়েকটি শুঁটকি উৎপাদনের মাচা ।
দেশীয় নানা জাতের মাছ এসব মাচার উপর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুকাঁনো হচ্ছে। শুঁটকি তৈরিতে এখানে প্রায় তিনশতাদিক শ্রমিক রাতদিন কাজ করছেন। তবে তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী শ্রমিক। কোন ধরনের কিটনাশক ছাড়াই প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয় বলে এখানকার শুঁটকির সুখ্যাতিও রয়েছে দেশ বিদেশে।
কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী ও রাজধানী ঢাকা সহ দেশের ভিবিন্ন স্থানের পাইকাররা এসে এ সমস্ত শুঁটকি ক্রয় করে নিয়ে যায়। উপজেলার বিল বালিঙ্গা, মেদির হাওড়, আটাউরি, উত্তর বাল্লা, আগাইড় হাওড়, শাপলা বিল, আকাশি বিলের মিঠা পানির মাছ যেমন, শোল, গজার, বোয়াল, গোলসা, টেংরা, বাইম, পুঁটি, হালুনি, চান্দা সহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ দিয়ে তৈরি হয় এসব শুঁটকি।
তবে অন্যান্য মাছের তুলনায় পুঁটি মাছের শুটকিই তৈরি হচ্ছে বেশি। এ সমস্ত পুঁটি মাছের শুটকি প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় ভোঁজন রসিকদের মুখরোচক দামী খাবার চ্যাঁপা শুঁটকি। শুঁটকি ব্যবসায়ী স্বাধীন দাস জানান এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভাল শুঁটকি হচ্ছে। এ ব্যবসায় জড়িত জেলেরা অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
আশ্বিন মাস থেকে শুরু করে মাঘ মাস পর্যন্ত শুঁটকিকে কেন্দ্র করে এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার শত শত নারী পুরুষ। তিনি আরো বলেন, এ মৌসুমে গড়ে ১২/১৫ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করি। আমাদের উৎপাদিত শুঁটকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে অন্য দেশেও যায়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফিন বলেন, শুঁটকি ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে কি ভাবে শুঁটকি তৈরি করবেন সে বিষয়ে প্রশিক্ষন দেওয়ার তালিকা প্রনয়ন করেছি। আশা করি এ থেকে ভাল সুফল পাবেন তারা।
আরও পড়ুন কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্র নদে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতি, অর্থ-মালামাল লুট
Leave a Reply