তারিকুল ইসলাম তারাঃ উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা কুয়াশার ঘন চাদরে ঢেকে গেছে। শীতের প্রচণ্ডতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামসহ সমগ্র বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ।
বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলা রাজিবপুর ও রৌমারীতে শীতের প্রকোপ আরও তীব্র। এখানে প্রতিদিনের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো শীতের কারণে দারুণ কষ্টে দিন পার করছে। শীতের প্রকোপে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় তাদের আয় প্রায় বন্ধ। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা গভীর হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।
সকালে শীতের কামড়ে ঘর থেকে বের হওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে, তবুও পেটের দায়ে তারা কাজের সন্ধানে দূর-দূরান্তে ছুটছেন। কিন্তু কাজের অভাবে ফিরে আসতে হচ্ছে খালি হাতে। রাস্তায় যান বহন গুলো চলছে হেড লাইট জালিয়ে ।
কর্মসংস্থানের সংকট
রাজিবপুর ও রৌমারী অঞ্চলে শ্রমজীবী মানুষেরা মূলত কৃষিকাজ, দিনমজুরি এবং ছোটখাটো কাজের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু শীতের কারণে কৃষি কাজসহ অন্যান্য কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব এলাকায় কর্মসংস্থানের সংকট চরমে উঠেছে।
যারা কাজের সন্ধানে বের হচ্ছেন, তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কোনো কাজ পাচ্ছেন না। এতে করে তাদের পরিবারের খাদ্যের জোগান দেওয়া হয়ে উঠছে প্রায় অসম্ভব।
শীতবস্ত্রের সংকট
সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলের অনেক পরিবারই শীত নিবারণের জন্য পর্যাপ্ত পোশাকের অভাবে ভুগছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু এবং নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শীতবস্ত্রের অভাবে এদের জীবনযাপন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন বা কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য না পৌঁছানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
মানবিক সহায়তার দাবি
স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারের কাছে এ অঞ্চলের মানুষদের জন্য দ্রুত মানবিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। তারা চায় শীতবস্ত্র বিতরণ, খাদ্য সহায়তা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হোক। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছে।
উত্তরবঙ্গের এই শীতকবলিত মানুষের কষ্ট দূর করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, যাতে এমন সংকট আর না হয়।
আরও পড়ুন
নাসিরনগরে জেলেরা এখন পুঁটি মাছের শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে
Leave a Reply