মোহাম্মদ দুদু মল্লিক শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক উদযাপিত হচ্ছে ৩দিনব্যাপী বৃক্ষ মেলা।
এ মেলার আজ দ্বিতীয় দিন। মেলাটিকে চমকপ্রদ করতেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় শহীদ নাজমুল স্মৃতি চত্তরে বৃক্ষ রোপণের উদ্যোগ।
এরই অংশ হিসেবে ১৯জুলাই বুধবার দুপুরে উপজেলার কাটাখালি ব্রীজ সংলগ্ন শহীদ নাজমুল স্মৃতি চত্তরে বৃক্ষ রোপণ কর্মসুচী অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মসুচীতে অংশ গ্রহন করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাঈম, সহকারি কমিশনার (ভুমি)মো. আশরাফুল কবির, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল আলম ভুইয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার হুমায়ুন দিলদার, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: এটিএম ফয়জুর রাজ্জাক আকন্দ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নুর নবী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শামছুল আলম, মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, "আমরা ১৮ বছর বয়স" সংগঠনের আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য তুষার আল নূর সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারি, গণমাধ্যম কর্মি ও স্থানীয় জনসাধারণ।
এসময় উক্ত চত্তরে ফলজ বৃক্ষ রোপণ করেন অতিথিগণ।উল্লেখ্য যে, ১৯৭১সালের ৬জুলাই মুক্তিযুদ্ধে "অপারেশন কাটাখালি' নামের ঐতিহাসিক কাটাখালী যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
ওই যুদ্ধে সম্মুখ যোদ্ধে শহীদ হন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী অপারেশন কমান্ডার নাজমূল আহসান এবং তাঁর পরিবারের অপর দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন ও আলী হোসেন সহ ১২ জন।জানা গেছে, শেরপুর-ঝিনাইগাতী- নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে কাটাখালী ব্রিজটি পারি দিয়ে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহাম্মদ নগরে ছিল ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে পাক আর্মির হেডকোয়ার্টার।
তাই এটি ধ্বংস করে পাকবাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে দিতে এই ব্রীজ ধ্বংস করা অপরিহার্য হয়ে উঠে। কিন্তু ইতিপূর্বে কয়েকটি অভিযান ব্যর্থ হয়।
অবশেষে ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই রাতে কোম্পানি কমান্ডার নাজমূলের নেতৃত্বে অপারেশন কাঁটাখালী সফল হয়।
ডিনামাইট ফিট করে কাটাখালি ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন তাঁরা। ফলশ্রুতিতে উল্লেখযোগ্য এলাকার যুদ্ধ পরিস্থিতি বদলে যায়।সফল ওই অপারেশন শেষ করতে ভোর হয়ে যাওয়ায় পাশ্ববর্তী রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামে আশ্রয় নেয় মুক্তিযোদ্ধারা।
কিন্তু ঐ গ্রামের জালাল মিস্ত্রী পাক বাহিনীর স্থানীয় হেড কোয়ার্টার আহাম্মদনগর ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবরটি পৌঁছে দেয়।
সংবাদ পেয়ে পাক হানাদার বাহিনী ৬ জুলাই সকালে রাজাকার, আল-বদরদের সাথে নিয়ে রাঙ্গামাটি গ্রাম তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ শুরু করে।
শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে শহীদ হন কমান্ডার নাজমুল আহসান, তার চাচাতো ভাই আলী হোসেন ও মোফাজ্জল হোসেন নামের তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এরপর পাক বাহিনী রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে ৬০/৭০ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন শহীদ হন।
এছাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়।স্বাধীনতা অর্জনের পর মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ নাজমুলকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
শহীদ নাজমুলের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিদ্যালয়ে একটি হল, নালিতাবাড়ীতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাঁটাখালী ব্রীজের পাশে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন শহীদ নাজমুল চত্তর।
আরও পড়ুন ফেনীর সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় ইত্যাদি ষ্টোরের উদ্যোগে ভেষজ চিকিৎসা কেন্দ্র” এর শুভ সূচনা
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাদিজা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.