মোহাম্মদ দুদু মল্লিক আঞ্চলিক প্রতিনিধি শেরপুর।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার নামেই চলছে পাঠদান

সরজমিন গেলে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার জমিদাতা সাদা মিয়া (৬২) তিনি জানান, গত ৩ জানুয়ারী ২০১৭ সালে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার নামে বিআরএস ১২১ খতিয়ানে ৬৬৪ নং দাগের ২.১৭ একরের কাতে ২০ শতাংশ জমি সাব রেজিঃ ওয়াকফ করে দেন তিনি।

মাদ্রাসাটি সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে করা হয়েছিল রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন।

এমতাবস্থায় এ মাদ্রাসার উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য সরকারী ভাবে সোলার ও অর্থও পাওয়া গেছে কয়েকবার।

রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসায় বেশ কয়েক বছর করা হয়েছিল ধর্মীয় সভা। শিক্ষাব্যবস্থার মান ভাল হওয়ায় অল্পতেই মাদ্রাসার নাম চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার জমিদাতা সাদা মিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা চাননা তাদের দেওয়া জমিতে সরকারী ভাবে এবতেদায়ী মাদ্রাসা। তিনারা চাওয়া রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা।

তবে মাদ্রাসায় কর্মরত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোঃ নাজমুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা সিরাজ,হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হক রুবেলসহ আরও অনেকেই জানান,মাদ্রাসার অবকাঠামো শিক্ষক শিক্ষিকাদের খানা ও মাসিক বেতনসহ বিভিন্ন খরচ বাবৎ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ঋণ ছিল।

ওই ঋনের জমা খরচ খাতায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ এর সাক্ষরিত রয়েছে তার প্রমাণ। শুধু তাই নয় ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি ঋনের দায় ভার প্রধান শিক্ষকের উপর ন্যস্ত করে উক্ত ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দিয়ে ওই কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা চলে যান।

এরপর থেকে মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মো: ইব্রাহিম ব্যক্তিগত ভাবে তার মাদ্রাসার নামে কালেকশন ছাড়া হলদিগ্রাম রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন।

হলদিগ্রাম রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মো: ইব্রাহিম বলেন ১৯৮১ সালে বিআরএস পর্চামূলে হলদীগ্রামে জৈনক মৃত মশর উদ্দিনের বাড়ির উত্তর পাশে ফুরকানিয়া মক্তব ছিল।

মরহুম হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ সরকার থাকাকালীন ওই মক্তব’গুলু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে নামকরণ করা হয়। এরপর বেশ কয়েকবার ওই মাদ্রাসায় সরকারী অনুদান আসে। এরপর পর্যায় ক্রমে মাদ্রাসাটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন,২০১৮ সালে বর্তমান সরকারের আমলে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার নামে নীতিমালা হলে সরকারের আওতায় আনতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি ভূমির বিআরএস পর্চামূলে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছিল।

ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলুতে কোন প্রকার বেতন ও ভাতা নাই তবুও নিয়মনীতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান রাখা হয়েছে।

আরও বলেন ২০১৫ সালে তার (মোহতামিম) এর নিজস্ব বসত বাড়িতে প্রাইভেট ভাবে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা প্রথম চালু রাখা হয়েছিল।

এরপর ২০১৭ সালে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার জন্য ২০ শতাংশ জমি ওয়াকফ নামে রেজিষ্ট্রি করে দেন মো: সাদা মিয়া মন্ডল। এর আগে সেখানে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা নামকরণ কখনই ছিলনা।

রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা বর্তমানেও চালু রাখা রয়েছে বলেও জানান তিনি।তবে বেশ কিছুদিন থেকে একটি মহল যারা চাচ্ছেনা রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসাটি উন্নতি হউক।

নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি কু-চক্রী মহল ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে হলদিগ্রাম রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার।

আরও বলেন, মাদ্রাসার প্রধান গেইট থাকা সত্যেও একটি মহল মাদ্রাসার মোহতামিম সহ কর্মরত শিক্ষকদের বীনা অনুমতিতে প্রবেশ করে বাউন্ডারি কেটে তাদের সুবিধার জন্য আরেকটা যাতায়াতের ব্যাবস্থা করে নেয়।

বিকল্প গেইট থাকায় সোলারের ব্যাটারি,মটর, লাইট,মশারী ও ত্রাণের ঢেউ টিন ও চেয়ার সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র হাড়িয়ে যায়।

উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন,তার সময় থাকাকালীন সময়ে রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার নামে দেওয়া হয়েছিল সোলার,বিদ্যুৎ চালিত মটর এছাড়াও মাদ্রাসাটি উন্নতি করার জন্য সরকারী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল দেড় লাখ টাকা।

এ বিষয়ে হলদিগ্রাম রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা ইব্রাহিমের সাথে কথা হলে বলেন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন এ বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে ফুড কর্ণার ও পানির পাম্প উদ্বোধন