শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন শেষ হয়েছে গত ৯ মে। তবে নতুন কমিটি ঘোষনা হয়নি এখনও।
জেলা আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি'র নাম ঘোষনা করা হবে বলে ওইদিন সম্মেলনের কাজ শেষ করা হয়। এদিকে এ কমিটি ঘোষনা একটু থেমে থাকার সুযোগে উপজেলার নৌকা বিদ্রোহীরা এবং অব্যহতি প্রাপ্তরা সোচ্চার হয়ে উঠেছে নিজেদেরকে দলীয় পদে আবারও প্রতিষ্ঠা করতে।
এজন্য আওয়ামীলীগের দুর্দিনের কান্ডারী ও ত্যাগী নেতাদের সাথে নৌকা বিরোধীদের চলছে মিথ্যা ভিত্তিহীন অপপ্রচার ও পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন।
ঝিনাইগাতি উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে ঝিনাইগাতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও ওই দিন কমিটি ঘোষনা হয়নি।
এদিকে ওইদিন কমিটি ঘোষনা না হওয়ার সুযোগে টানা তিন বারের সভাপতিকে এবার পুনরায় সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে নৌকা বিদ্রোহীরা সরব হয়ে উঠেছে।
তবে টানা তিন বারের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম অনুসারিরাও থেমে নেই। তারা আবারও সভাপতি হিসেবে পেতে ওইসব নৌকা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ নৌকার টিকেট না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে এবং অপর বিদ্রোহী প্রার্থী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহম্মেদ নৌকার টিকেট না পেয়ে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন।
কিন্তু উভয় প্রার্থীই সদ্য বিদায়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়ারেজ নাইম সব বাঁধা পেরিয়ে ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। সেইসাথে ওই দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। কিন্তু তার পরও থেমে নেই নৌকা বিদ্রোহীরা।
এদিকে ওই দুইজনের সাথে যোগ দেয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করা একেএম বেলায়েত হোসেন ও গোলাম মোস্তফা।
উল্লেখিত বিদ্রোহীরা সম্প্রতি একাট্টা হয়ে দলের দুর্দিনের কান্ডারি ও টানা ২৩ বছর দলের হাল ধরে রাখা সদ্য সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএমএ ওয়ারেজ নাইমকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
সম্প্রতি ওই নৌকা বিদ্রোহীরা বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান নাইমের বিরুদ্ধে, বিগত সময় তিনি জাসদের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা নিয়ে এবং তৎকালে জাসদ ছাত্রলীগ থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা ভোলা হত্যার ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা আসামী হওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। সেইসাথে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে দলের মধ্যে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার নানা অপতৎপরতা শুরু করেন।
এদিকে ওইসব সংবাদের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে ২৩ মে সংবাদ সম্মেলন করে ওয়ারেজ নাইম। ওই নৌকা বিদ্রোহীরা প্রকাশ্যে এসে নাইম এর সংবাদ সম্মেলনের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন গত ২৫ মে।
তবে এবিষয়ে ঝিনাইগাতি উপজেলায় সরিজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা জানায়, নাইম ঝিনাইগাতি উপজেলায় দলের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই ওই গুটিকয়েক নৌকা বিদ্রোহীরা নানা ভাবে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠে।
তারা গত ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘিরে তৎকালীন সভাপতি প্রার্থী এসএমএ ওয়ারেজ নাইমের উপর হামলা চালায়। এসময় নাইমসহ ৩০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়।
এরপরও থেমে নেই সেই বিদ্রোহীরা। আবারও সোচ্চার হয়ে উঠেছে দলের পদ-পদবির জন্য। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোন নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহীদেরকে দলের কোন পদ পদবিতে যাতে না যেতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
কিন্তু তারপরও ঝিনাইগাতি উপজেলা আওয়ামীলগের বিদ্রোহীরা দুর্দিনের নৌকার কান্ডারীকে হটাতে নৌকা বিদ্রোহীরাই উঠে পড়ে লেগেছে।
এবিষয়ে সদ্য সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. কামাল হোসেন জানায়, আমাদের সম্মেলন সম্প্রতি শেষ হয়েছে। দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যাচাই-বাছাই করে যাকেই দলের সভাপতি-সম্পাদকের দায়িত্ব দিবেন আমরা তার সাথেই আছি।
তবে আমাদের সাবেক তিন বারের সভাপতি নাইম ভাইয়ের বিরুদ্ধে দলের ভিতরে কিছু কুচক্রি মহল নানা কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে তা ঠিক নয়। আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি নাইম ভাইয়ের কোন দোষ-ত্রুটি নেই। তিনি বরাবরই দলের এবং এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম জানায়, দীর্ঘ দিন থেকে দলকে সু-সংগঠিত করা এবং দুর্দিনেও দলের হাল ধরে রেখে টানা ২৩ বছর ধরে দলের সভাপতি পদে থাকা নাইম ভাইয়ের বিরুদ্ধে দলের ভিতর কিছু কুচক্রি মহল কেবলমাত্র ঈর্ষান্বিত হয়ে যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যাতে অবহেলিত ঝিনাইগাতি উপজেলার মাটি ও মানুষের কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক মজিবর রহমান জানায়, আজ যারা নাইম ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে তারাও এক সময় তার কমিটিতেই ছিলেন। তখন তারা নাইম ভাইয়ের বিষয়ে কোন দুর্নাম বা কোন কিছু না বললেও এখন বলছে কেবলমাত্র স্বার্থের জন্য।
এদিকে নাইম বিদ্রোহী সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানায়, বিগত কমিটি গঠনের সময় নাইম একটি মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাকে জেল খাটায়। তখন ওই কমিটিতে প্রকৃত আওয়ামীলীগের কেউ ছিলেন না।
সাবেক যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জানায়, তৎকালে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করেছি ঠিক কিন্তু সেসময় বিএনপি মাঠে ছিলেন না বলে কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত থাকায় আমরা নির্বাচন করি এবং পরবর্তিতে দল থেকে শোকজ করলে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে আমাদের ক্ষমা করে দেয়া হয়।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা নির্বাচনের নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুক আহম্মেদ জানায়, নাঈম এর বিপক্ষে আমরা তার ক্ষমতার কাছে না কুলাতে পেরে নির্বাচনে হেরেছি। সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের সম্মতিতেই আমরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাদিজা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.